logo

চরৈবেতি

  • August 13th, 2022
Suman Nama

চরৈবেতি

চরৈবেতি

সুমন চট্টোপাধ্যায়

বাংলাস্ফিয়ার। নতুন বছরে, নতুন দশকে আমার বিনম্র নিবেদন।

আপনি স্বাগত। বাঙালি হলে অথবা না হলেও।

বাংলাস্ফিয়ার শব্দটি আমি লেখক¬-সাংবাদিক সুদীপ চক্রবর্তীর বই থেকে ধার নিয়েছি। অনবদ্য বই, বাঙালি সমাজের সরস, গভীর, বস্তুনিষ্ঠ, অতি মনোরম, সুখপাঠ্য একটি আলেখ্য। বইটি নিয়ে বিশদে লেখার ইচ্ছে আছে পরে। আপাতত এইটুকু বলে রাখি, আমার স্বজাতি নিয়ে এর চেয়ে ভালো বই আমি অন্তত পড়িনি। “দ্য হিন্দু’ কাগজের আলোচক সঠিক ভাবেই মন্তব্য করেছেন, ‘Written with verve, energy and polish and drawing on considerable resources both anecdotal and archival, Chakravarty’s book takes its place beside other contemporary attempts at ‘collective’portraiture, such as Jeremey Paxman’s The English and John Hooper’s The Italians.’’ থ্রি চিয়ার্স ফর সুদীপ!

ছোট্ট শব্দ কিন্তু তার দ্যোতনা, ব্যঞ্জনা,ব্যাপ্তি সুগভীর। বাংলা করলে বলতে হয় বঙ্গবলয়। ভূগোল অথবা ধর্মকে ছাপিয়ে এই বলয়ে ঐক্যের একমাত্র মাপকাঠি হল ভাষা, ‘ আ মরি বাংলা ভাষা’। হান-চাইনিজ আর আরবদের পরেই ‘ এথনো লিঙ্গুইস্টিক’ সম্প্রদায় হিসেবে সারা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছি আমরা বাঙালিরাই। গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার চেয়েও সমষ্টিগত ভাবে বঙ্গভাষীদের সংখ্যা বেশি। চোখ বুজে একটিবার এ কথা ভাবলে ধমনীতে কেমন একটা শিহরণ হয় না?

আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার লক্ষ্য হল পায়ে পায়ে এই বঙ্গবলয়ের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করা। আমি বিলক্ষণ জানি কাজটা কতটা দুঃসাধ্য। তবু স্বপ্ন দেখার জন্য তো বাড়তি শারীরিক ক্লেশ হয় না, সরকার বাহাদুরকে ট্যাক্সোও দিতে হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে পথ চলতে চলতে অনেক কিছু ছেড়েছি বা ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। কেবল স্বপ্ন দেখার বদভ্যাসটি পুরাতন ভৃত্যের মতো এখনও ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকে অষ্টপ্রহর। ছাড়ালে না ছাড়ে, কী করিব তারে, বলুন দেখি!

আপাতত এই উদ্যোগ একান্ত ভাবে আমার নিজস্ব। অনেকটা রাজকাপুরের ছবির মতো, কাহিনি, চিত্রনাট্য, প্রযোজনা, পরিচালনা, অভিনয়, সবকিছুই আমার। বলতে পারেন, এটাই এখন আমার জীবন। পশ্চিমে শুধু ব্লগ লিখেই মা লক্ষ্মীর কৃপা পেয়ে থাকেন অসংখ্য লেখক। নিরুপায় হলে আমাকেও হয়ত সেই পথে এগোতে হবে, আজ নয়, কালও নয়, ভবিষ্যতে কোনও এক দিন। বিজ্ঞজনেরা সাবধান করে দিয়েছেন, ভার্চুয়াল পৃথিবীটা নাকি সব শাইলকে ভরা, ইন্টারনেটে লেখা পড়ার জন্য কেউ নাকি গ্যাঁটের কড়ি খরচা করতে চান না। সেটাই অমোঘ ভবিতব্য হলে আমার কিছুই করার থাকবে না, বাংলাস্ফিয়ারের একটা এপিটাফ লিখে দোকান বন্ধ করে দিতে হবে। তবে উদ্যোগের সূচনালগ্নে আমি এমতো অলুক্ষুণে কথা ভাবতেই চাই না। জয় মা বলে তরী ভাসিয়ে দিলাম, আপনারা চাইলে ভেসে থাকব, না চাইলে……….

একা শুরু করলাম মানে এই নয় বরাবর একাই থাকতে চাইব। এই প্রয়াস যদি আপনাদের মনে ধরে আমিও তখন সঙ্গত করার সঙ্গী ঠিক খুঁজে নেব, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে আমাদের বলয়। আমার ইচ্ছা আছে অচিরে অতিথি লেখকদের লেখাও থাকবে এখানে, ধীরে ধীরে বাংলাস্ফিয়ার হয়ে উঠবে মুক্ত ভাবনা, চেতনা, সৃজনের অবাধ মুক্তমঞ্চ। মঞ্চের মধ্যমণি হয়ে থাকবে কেবল বাংলা আর বাঙালি।

নতুন বছরের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। আর পারলে সঙ্গে থাকবেন বাংলাস্ফিয়ারের।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *